নতুন ভোটার হতে কি কি লাগে | Documents for NID Application 2024

নতুন ভোটার হতে শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ, জন্ম নিবন্ধন, পিতা-মাতার এনআইডি, এবং নাগরিক সনদ প্রয়োজন হয়। জানুন নতুন ভোটার হতে কি কি লাগে এ সম্পর্কে বিস্তারিত।

যারা নতুন ভোটার আইডি কার্ড করতে চান, তাদের মনে একটি প্রশ্ন থাকতে পারে যে ভোটার আইডি কার্ড করতে কি কি লাগে। এই ব্লগে ভোটার আইডি বা জাতীয় পরিচয় পত্র করার জন্য যা যা কাগজপত্র লাগে তা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করলাম।

Advertisement

জাতীয় পরিচয় পত্র অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি আইডি। তাই নতুন ভোটার নিবন্ধন করার ক্ষেত্রে নিশ্চিত হতে হয় যে ব্যক্তি একজন বাংলাদেশি নাগরিক, তার সকল তথ্য সঠিক। এছাড়া নতুন ভোটার আবেদনকারী পূর্বে কোথাও ভোটার হতে পারবেন না।

NID Card করতে বেশ কিছু কাগজপত্র প্রয়োজন হয়। তাছাড়া যেসব এলাকায় রোহিঙ্গারা বসবাস করে সেখানে নতুন ভোটার হতে বা NID করতে গেলে কিছু অতিরিক্ত কাগজপত্র প্রয়োজন হতে পারে। এক্ষেত্রে উপজেলা নির্বাচন অফিস থেকে অতিরিক্ত কি কি কাগজপত্র লাগবে তা জেনে নিতে পারেন।

আসুন জেনে নিই, ভোটার আইডি কার্ড করার জন্য কি কি Documents প্রয়োজন হয়।

Advertisement

ভোটার আইডি কার্ড করতে কি কি লাগে

নতুন ভোটার আইডি কার্ড করতে শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ, জন্ম নিবন্ধন, পিতা-মাতার NID, এবং বাবা ব্যতীত রক্তের সম্পর্ক আছে এমন ৩ জনের জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি লাগে। এছাড়া ঠিকানা প্রমাণের জন্য Utility বিলের কপি/জমির খাজনা রশিদ/ Holding Tax রসিদ অথবা চেয়ারম্যান বা কমিশনারের প্রত্যয়ন লাগে।

১. জন্ম নিবন্ধন সনদ

এনআইডি কার্ড করতে প্রথমেই প্রয়োজন হবে ডিজিটাল জন্ম নিবন্ধন (Digital Birth Ceritifcate)। জন্ম নিবন্ধনে বাংলা তথ্যের পাশাপাশি ইংরেজি তথ্য থাকা উচিত। যদি জন্ম নিবন্ধন তথ্য ইংরেজিতে না থাকে খুব সহজেই অনলাইনে ইংরেজি তথ্য যুক্ত করার জন্য আবেদন করতে পারবেন।

২. শিক্ষা সনদ

জন্ম নিবন্ধনের পরে ২য় গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্ট হচ্ছে শিক্ষা বোর্ড কর্তৃক প্রদত্ত Academic Certificate যেমন, SSC বা HSC সার্টিফিকেট। সার্টিফিকেটে নিজ নাম, পিতা-মাতার নাম ও জন্ম তারিখ জন্ম নিবন্ধনের সাথে অবশ্যই মিল থাকতে হবে। যদি এসব তথ্যে কোনরূপ গরমিল থাকে এনআইডি কার্ড করা যাবে না। তাই এসব তথ্য আগে চেক করে নিতে হবে।

কারও শিক্ষা সনদ না থাকলে তার পরিবর্তে পাসপোর্ট অথবা ড্রাইভিং লাইসেন্স (Driving License) দেয়া যেতে পারে। তাও না থাকলে শুধুমাত্র জন্ম নিবন্ধন হলেও চলবে।

Advertisement
নতুন ভোটার হতে কি কি লাগে

৩. পিতা-মাতার এনআইডি কার্ড

এখন নতুন জাতীয় পরিচয় পত্রের তথ্যে পিতা-মাতার NID নাম্বার যুক্ত করতে হয়। তাই নতুন ভোটার হতে অবশ্যই পিতা ও মাতার এনআইডি কার্ড প্রয়োজন হবে।

পিতা ও মাতার এনআইডি কার্ডে তাদের নাম আপনার সকল ডকুমেন্ট যেমন জন্ম নিবন্ধন ও শিক্ষা সনদ অনুযায়ী হতে হবে। এছাড়া, পিতা-মাতার কেউ মৃত হলে অবশ্যই মৃত্যু নিবন্ধন সনদ সাথে যুক্ত করতে হবে

৪. রক্তের গ্রুপ পরীক্ষার রিপোর্ট

Smart NID Card বা জাতীয় পরিচয় পত্রে নাগরিকের রক্তের গ্রুপ (Blood Group) তথ্য যুক্ত করতে হয়। তাই নিকটস্থ কোন Pathology থেকে আপনার রক্তের গ্রুপ পরীক্ষা করিয়ে নিন।

রক্তের গ্রুপ পরীক্ষার রিপোর্টটির ছবি বা Scan কপি অনলাইনে আপলোড করতে হবে এবং আবেদনের সাথে যুক্ত করে উপজেলা নির্বাচন অফিসে জমা দিতে হবে।

Advertisement

৫. নাগরিক সনদ

নতুন ভোটারের জন্য আবেদন করতে নাগরিক সনদ একটি বাধ্যতামূলক ডকুমেন্ট। এটি ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা বা সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলর অফিস থেকে সংগ্রহ করতে হবে। এটিকে চেয়ারম্যান সার্টিফিকেট বা চেয়ারম্যান প্রত্যয়ন পত্র ও বলা হয়ে থাকে।

৬. স্বামী/স্ত্রীর এনআইডি কার্ড

ভোটার আবেদনকারী বিবাহিত হলে আবেদনের সাথে অবশ্যই স্বামী বা স্ত্রীর জাতীয় পরিচয় পত্রের কপি জমা দিতে হবে। তাছাড়া, আইডি কার্ডের পাশাপাশি নিকাহনামা (Marriage Certificate) বা কাবিন নামার কপিও জমা দেয়া যায়।

৭. অঙ্গীকারনামা

ভোটার আইডি কার্ডের অঙ্গীকারনামা হচ্ছে একটি লিখিত অঙ্গীকার যে আবেদনকারী পূর্বে কোন এলাকা থেকে ভোটার নিবন্ধন করেন নি। তিনি ২য় বার ভোটার হয়েছেন বলে প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা মেনে নিতে বাধ্য থাকবেন। দেখুন নতুন ভোটার হওয়ার অঙ্গীকার নামা লেখার নিয়ম।

ADVERTISEMENT

নতুন ভোটার হওয়ার জন্য অঙ্গীকার নামা সবার জন্য প্রয়োজন হয় না। যারা আগে ভোটার হওয়ার সুযোগ থাকলেও ভোটার হন নি এমন আবেদনকারীর ক্ষেত্রে অঙ্গীকার নামা প্রয়োজন হবে।

একজন ব্যক্তির শুধুমাত্র একবারই ভোটার নিবন্ধন বা জাতীয় পরিচয় করা যায়। ২য় বার জাতীয় পরিচয় পত্র করার সুযোগ নেই এবং এটি আইনগত অপরাধ।

তাই, যাদের বয়স বেশি হয়েছে এবং আগে ভোটার হওয়ার সুযোগ থাকা স্বত্ত্বেও ভোটার হননি, তাদেরকে একটি লিখিত অঙ্গীকারনামা জমা দিতে হয়।

এটি A4 সাইজের কাগজে কম্পিউটার কম্পোজ করে নিচে স্বাক্ষর করে জমা দিলে চলবে। তাছাড়া স্থানীয় ফটোকপির দোকানে এ ধরণের অঙ্গীকারনামার নমুনা পাবেন।

৮. হোল্ডিং ট্যাক্স রশিদ

নতুন জাতীয় পরিচয়পত্রের আবেদন করার জন্য আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্ট হচ্ছে বাড়ির Holding Tax পরিশোধের রসিদ। Holding Tax ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা বা সিটি কর্পোরেশনে পরিশোধ করা হয়ে থাকে।

ADVERTISEMENT

এই হোল্ডিং ট্যাক্সের রসিদে আবেদনকারীর নাম না থাকলেও চলবে। তবে পিতা-মাতা বা পরিবারের কোন সদস্যের নামে হলেও চলবে।

৯. ইউটিলিটি বিলের কপি

নতুন ভোটার হওয়ার আবেদনের সাথে ঠিকানার প্রমাণ হিসেবে বিদ্যুৎ, পানি অথবা গ্যাস বিলের কপি জমা দিতে হবে। বিলের কাগজে ভোটার আবেদনকারীর নিজ নাম না হয়ে পিতা-মাতা বা বাড়ির অন্য কোন সদস্যের নাম থাকলেও চলবে। বিলের কপি না থাকলে হোল্ডিং ট্যাক্স পরিশোধের রশিদের কপিও জমা দিতে পারেন।

১০. পাসপোর্ট ও ড্রাইভিং লাইসেন্সের কপি

জাতীয় পরিচয় পত্র নিবন্ধনের জন্য পাসপোর্ট এবং ড্রাইভিং লাইসেন্স বাধ্যতামূলক কোন ডকুমেন্ট নয়। তবে কারও যদি পড়াশুনা না থাকে অর্থাৎ শিক্ষা সনদ না থাকে সেক্ষেত্রে পাসপোর্ট অথবা ড্রাইভিং লাইসেন্সের কপি জমা দিতে হবে।

কোন আবেদনকারীর যদি এগুলো না থাকে সেক্ষেত্রে শুধুমাত্র অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদ দিয়ে আবেদন করা যাবে।

FAQs

নতুন ভোটার হতে কি কি লাগে?

নতুন ভোটার হতে লাগবে শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ, জন্ম নিবন্ধন, পিতা-মাতার এনআইডি, এবং পিতা ব্যতীত রক্তের সম্পর্ক আছে এমন ৩ জনের জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি। এছাড়া ঠিকানা প্রমাণের জন্য ইউটিলিটি বিলের কপি/জমির খাজনা রশিদ/ হোল্ডিং ট্যাক্সের রসিদ অথবা চেয়ারম্যান বা কমিশনারের প্রত্যয়ন লাগে।

বিভিন্ন ডকুমেন্টে আমার ভিন্ন নাম ও বয়স আছে। এমতাবস্থায় কোনটা ভোটার রেজিস্ট্রেশনের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে?

নাম এবং বয়সের ক্ষেত্রে SSC বা সমমানের পরীক্ষার সনদে উল্লেখিত বয়স ও নাম। ভবিষ্যতে ৫ম/৮ম সমাপনী পরীক্ষার সনদ ও গ্রহণযোগ্য হবে। কারও লেখাপড়া না থাকলে জন্ম সনদ, পাসপোর্ট, ড্রাইভিং লাইসেন্স দিয়েও আবেদন করা যাবে।

মুল টপিকনতুন ভোটারের জন্য আবেদন
হোমপেইজNID BD
Advertisement

Similar Posts

10 Comments

    1. সঠিক ঠিকানা যেটি সেটিই দিতে হবে। বর্তমান ঠিকানা হচ্ছে বর্তমানে যেখানে ভোটার হতে চান। আর স্থায়ী ঠিকানা হচ্ছে যেখানে স্থায়ী জায়গা সম্পত্তি আছে।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।