বাংলাদেশী ই পাসপোর্ট রিনিউ করার নিয়ম ২০২৩

দেশে হোক বা বিদেশেই হোক অনলাইনেই আপনাকে ই পাসপোর্ট রিনিউ করার আবেদন করতে হবে। জেনে নিন ই পাসপোর্ট রিনিউ করার নিয়ম ও কি কি লাগে।

২০২০ সাল থেকে বাংলাদেশে ই পাসপোর্ট ব্যবহার শুরু হয়। ই-পাসপোর্টে রয়েছে ইলেক্ট্রনিক চিপ যার মধ্যে উক্ত পাসপোর্ট হোল্ডারের সকল তথ্য সংরক্ষিত থাকে।

Advertisement

বর্তমানে সারা দেশে এবং দেশের বাইরেও E Passport প্রদান করা চালু করেছে। ই পাসপোর্ট এর অন্যতম সুবিধা হল দীর্ঘ সময় লাইনে না দাঁড়িয়ে ইমিগ্রেশনে স্বয়ংক্রিয় ই-গেইটের মাধ্যমে চেকিং ছাড়াই প্রবেশ করতে পারবেন।

যেহেতু এখন এমআরপি পাসপোর্ট আর দেয়া হচ্ছে না, তাই সবাইকে ই পাসপোর্টই নিতে হবে। ই পাসপোর্ট আবেদন করা এবং পাসপোর্ট রিনিউ করার নিয়মে কিছুটা ধরাবাধা নিয়ম রয়েছে।

Advertisement

আজকের ব্লগে আমি জানাব, কিভাবে আপনার পাসপোর্ট রিনিউ করবেন, কি কি কাগজপত্র লাগবে, এবং কিভাবে অনলাইনে আবেদন করবেন।

ই পাসপোর্ট রিনিউ করার নিয়ম – Passport Renewal

যেহেতু বর্তমান সময়ে বাংলাদেশের সকল জেলায় ই পাসপোর্ট সেবা চালু আছে তাই আপনাকে পুরনো এমআরপি পাসপোর্ট রিনিউ করে নতুন ই পাসপোর্ট সেবা গ্রহণ করতে হবে। অনলাইন থেকে আপনি নিজেই পাসপোর্ট রিনিউ করার ফরম পুরণ করতে পারবেন।

তবে পাসপোর্ট রিনিউ করার ক্ষেত্রে অবশ্যই খেয়াল রাখবেন আপনারা জাতীয় পরিচয় পত্রের সকল তথ্য অনুযায়ী পাসপোর্ট এর তথ্য প্রদান করতে হবে। এনআইডির তথ্য অনুসারেই পাসপোর্ট সংশোধন করা যাবে।

Advertisement

এছাড়া যারা পুরাতন পাসপোর্টের তথ্য সংশোধন করবেন তারাও পাসপোর্ট রিনিউ করার সময় তা করতে পারেন। তবে এজন্য অবশ্যই এনআইডি কার্ড, জন্ম নিবন্ধন বা শিক্ষাগত যোগ্যতার সার্টিফিকেট থাকতে হবে।

অনলাইনে ই পাসপোর্ট রিনিউ করার নিয়মাবলী

পুরনো এমআরপি পাসপোর্ট রিনিউ করার জন্য আপনি স্বাভাবিকভাবে নূতন ই পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করবেন।

এক্ষেত্রে আপনাকে শুধুমাত্র আইডি ডকুমেন্টস (ID Documents) অপশন থেকে আপনার পূর্ববর্তী এমআরপি পাসপোর্ট (MRP Passport) সিলেক্ট করে বিস্তারিত তথ্য প্রদান করবেন।

ছবিতে দেখানো অপশন থেকে নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করবেন।

Advertisement
ই পাসপোর্ট রিনিউ করার নিয়ম

ধাপ ১ঃ প্রথমে ID Documents অপশনে প্রবেশ করে, Yes, I have a Machine Readable Passport (MRP) এটি সিলেক্ট করুন।

ধাপ ২ঃ What is the reason for your passport request? এখানে Arrow চিহ্নে ক্লিক করে আপনার পাসপোর্ট রিনিউর কারণ উল্লেখ করুন।

ই পাসপোর্ট রিনিউ করার নিয়ম

আপনি নিচের কারণগুলো থেকে একটি কারণ বাছাই করুন আপনার সুবিধা অনুযায়ী।

  • CONVERSION TO EPASSPORT- MRP থেকে ই পাসপোর্টের রুপান্তর
  • EXPIRED- যদি পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হয়ে যায়
  • LOST/ STOLEN- যদি হারিয়ে যায় বা চুরি হয়ে যায়
  • DATA CHANGE- তথ্য পরিবর্তনের জন্য
  • UNUSABLE- পাসপোর্ট নষ্ট বা ছিড়ে গেলে।
  • OTHER- অন্যান্য কারণে

ধাপ ৩: আপনার পাসপোর্ট নম্বরটি লিখুন যেমন (EG12345678)

ধাপ ৪: পাসপোর্ট প্রদানের তারিখ ও মেয়াদ উত্তীর্ণের তারিখ লিখুন।

পরবর্তীতে বাকি ধাতগুলো স্বাভাবিকভাবে চাহিত তথ্যগুলো দিয়ে পূরণ করে আবেদনটি সাবমিট করুন।

তারপরে আপনার পিতা মাতার তথ্য, স্বামী বা স্ত্রীর তথ্য এবং পাসপোর্টের ধরণ, ডেলিভারীর ধরণ সিলেক্ট করে আবেদটি সম্পন্ন করতে হবে।

এই পদ্ধতি ব্যবহার করে ঘরে বসে আপনি মোবাইল ফোন কিংবা কম্পিউটার ব্যবহার করে পাসপোর্ট রিনিউ/ ই পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করতে পারবেন।

পাসপোর্ট রিনিউ করার ফরম পুরণে কোন অসুবিধা হয় অথবা এ সম্পর্কিত কোন প্রশ্ন থাকলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন।

পাসপোর্ট রিনিউ করতে কি কি লাগে

  • আবেদনপত্রের সারাংশের প্রিন্ট কপি (অ্যাপয়েন্টমেন্ট সহ)
  • সনাক্তকরণ ডকুমেন্টের কপি (জাতীয় পরিচয় পত্র অথবা অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদ)
  • পূর্ববর্তী পাসপোর্ট এবং ডাটা পেজের কপি
  • এ চালান/ মানি অর্ডার/ ব্যাংক সার্টিফাইড চেকবুক
  • সরকারি চাকরিজীবীদের ক্ষেত্রে GO/NOC যদি থাকে
  • তথ্য সংশোধনের ক্ষেত্রে অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
  • রেজিস্ট্রেশন ফরম বা আবেদনপত্রের প্রিন্ট কপি (প্রয়োজন ক্ষেত্রে)

পাসপোর্ট রিনিউ ফি কত?

পাসপোর্ট রিনিউ করতে ৫ বছর মেয়াদী ৪৮ পাতার পাসপোর্ট রিনিউ ফি ৪,০২৫ টাকা এবং ৬৪ পাতার পাসপোর্ট রিনিউ ফি ৬,৩২৫ টাকা। অপরদিকে ১০ বছর মেয়াদী ৪৮ পাতার পাসপোর্ট রিনিউ ফি ৫,৭৫০ টাকা এবং ৬৪ পাতার পাসপোর্ট রিনিউ ফি ৮,০৫০ টাকা। সাধারণত পাসপোর্ট রিনিউ করার ফি নূতন পাসপোর্ট আবেদন ফি’র মতই। 

পাসপোর্ট রিনিউ ফরম জমা দেয়ার নিদের্শনা

  • অনলাইনে পাসপোর্ট রিনিউ আবেদন করার পরে আবেদনের কপিটি A4 সাইজ কাগজে উভয় পৃষ্ঠা প্রিন্ট করবেন।
  • পাসপোর্ট রিনিউ ফি পরিশোধ করুন।
  • প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের ফটোকপি সংযুক্ত করুন।
  • পাসপোর্ট রিনিউ এর ক্ষেত্রে মূল পাসপোর্ট এর তথ্য প্রদান করতে হবে।
  • হারানো পাসপোর্টের ক্ষেত্রে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) এর মূল কপি দাখিল করতে হবে।
  • পাসপোর্ট হারিয়ে গেলে অথবা চুরি হলে দ্রুত নিকটস্থ থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে হবে।

আমেরিকা থেকে ই পাসপোর্ট রিনিউ

আমেরিকা থেকে ই পাসপোর্ট রিনিউ করার জন্য একই পদ্ধতিতে epassport.gov.bd ওয়েবসাইটে গিয়ে অনলাইনে আবেদন করতে হবে। অনলাইনে আবেদনের সময় ID Documents  থেকে আপনার পূর্ববর্তী পাসপোর্ট এমআরপি সিলেক্ট করে পাসপোর্ট নাম্বার দিয়ে আবেদন সম্পন্ন করুন।

সম্প্রতি আমেরিকার লস এঞ্জেলস, নিউ ইয়র্ক ও ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ কনস্যুলেট থেকে ই পাসপোর্ট রিনিউ করার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এবং যেসব এম্বাসি থেকে এখনো ই পাসপোর্ট রিনিউ কার্যক্রম চালু হয়নি সেখান থেকে এমআরপি পাসপোর্ট রিনিউ করতে হবে।

FAQs

পাসপোর্ট রিনিউ করার জন্য নতুন পাসপোর্ট ফি ৫ বছরের জন্য ৪০২৫ টাকা এবং ১০ বছরের জন্য ৫৭৫০ টাকা।

সাধারণ ডেলিভারীর ক্ষেত্রের ই পাসপোর্ট রিনিউ করতে ১২-১৫ দিন সময় লাগতে পারে।

পাসপোর্ট রিনিউ করতে সময় নিয়ে বিধি-নিষেধ নেই। আপনার বর্তমান পাসপোর্ট এর মেয়াদ থাকা অবস্থায় আপনি যেকোনো সময় ই পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করতে পারেন। তবে এমআরপি পাসপোর্ট এর মেয়াদ শেষ হওয়ার কমপক্ষে ৬ মাস পূর্বে রিনিউ আবেদন করা উত্তম।

বয়স ১ দিন থেকে ১৯ বছরের মধ্যে হলে জন্ম নিবন্ধন দিয়ে ই পাসপোর্ট নবায়ন করতে পারবেন। ২০ বছর বা তার বেশি হলে পাসপোর্ট নবায়ন করার জন্য NID Card প্রয়োজন হবে।

পাসপোর্ট সংক্রান্ত আরও তথ্য

Advertisement

Similar Posts

4 Comments

    1. অনলাইনে আবেদন করতে হবে আগে। তারপর পাসপোর্ট অফিসে জমা দিবেন, নতুন করে ফিঙ্গার আর ছবি তুলতে হবে। কারণ এখন ই পাসপোর্ট দেয়া হবে।

      1. আমার বড় ভাইয়ের MRP অফিসিয়াল পাসপোর্ট ছিল কারন সরকারি কলেজের অধ্যাপক ছিলেন । বর্তমানে অবসর নিয়েছেন। বয়স বর্তমানে ৬২+। এখন পবিত্র হজ্বে যাওয়ার পাসপোর্ট রিনিউ করতে হচ্ছে। তাই ই পাসপোর্ট এর জন্য রেনিউও করার জন্য আবেদন করতে হচ্ছে। এক্ষেত্রে কি অতিরিক্ত কোন ডকুমেন্টস সাবমিট করতে হবে? আর ১০ বছর মেয়াদি নাকি ৫ বছর মেয়াদি আবেদন করতে পারবো?
        অনেকে বলছে ১০ বছরের জন্য আবেদন করা যাবে না। আর এক্সপ্রেস আবেদন করতে পারবো কি ১০ বছরের জন্য।
        প্লিজ সুপরামর্শ আশা করছি।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।