চট্টগ্রামে প্রবাসীদের NID Card পেতে জটিলতা বাড়বে
রোহিঙ্গাদের কারণে চট্টগ্রাম অঞ্চলের প্রবাসীদের জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধনে বা এনআইডি কার্ড পেতে বাড়তি ঝামেলা পোহাতে হবে। বিশেষ কমিটির সুপারিশ পেলেই মিলবে জাতীয় পরিচয় পত্র।
নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা জানান, বর্তমানে চট্টগ্রামের বিভিন্ন অঞলে রোহিঙ্গারা ছড়িয়ে পড়েছে। তাই ৩২টি এলাকাকে নির্বাচন কমিশন জাতীয় পরিচয় পত্র নিবন্ধনের জন্য বিশেষ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করেছে।
এসব এলাকায় নতুন ভোটার নিবন্ধনে মানতে হবে বিশেষ নিয়ম, দিতে হবে অতিরিক্ত তথ্য এবং অপেক্ষা করতে হবে বিশেষ কমিটির অনুমোদনের জন্য।
ভোটার নিবন্ধনে জটিলতা
চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকায় রোহিঙ্গারা ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ায়, ৩২টি এলাকায় জাতীয় পরিচয় পত্র নিবন্ধনে নেয়া হচ্ছে বিশেষ ব্যবস্থা। এসব এলাকায় একজন নাগরিককে ভোটার হতে হলে একটি বিশেষ তথ্য ফরম পূরণ করতে হয়, এতে দিতে হয় বাড়তি বেশি কিছু তথ্য। তাছাড়া ওয়ার্ড মেম্বার বা কাউন্সিলরের প্রত্যয়ন সহ অনেক ডকুমেন্ট দিতে হয়।
জানুন- নতুন ভোটার হতে কি কি লাগে।
এরপর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নেতৃত্বে গঠিত বিশেষ কমিটির যাচাই-বাছাইয়ের পর তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করার পর অনুমোদন করলেই ভোটার হওয়া যাবে। তাই, জাতীয় পরিচয় পত্র পেতে অপেক্ষাকৃত অনেক বেশি সময় লাগবে।
আরও পড়ুন:
এছাড়া এসব এলাকার নাগরিক যারা প্রবাস থেকে ভোটার নিবন্ধনের আবেদন করছেন, তাদের ও এনআইডি পেতে বিলম্ব হবে।
জানা গেছে, ইতোপূর্বে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর অনেকে অবৈধ যোগসাজশের মাধ্যমে পাসপোর্ট নিয়ে মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন দেশে গিয়ে অপকর্ম করে ধরা পড়ছেন বাংলাদেশি নাগরিক হিসেবে। এতে দেশের সুনাম নষ্ট হচ্ছে।
তাই প্রবাস থেকেও কোন রোহিঙ্গা যেন বাংলাদেশি জাতীয় পরিচয় পত্র নিতে না পারে, সেজন্য প্রবাসীদের ভোটার আবেদনগুলোতেও বিশেষ কমিটির অনুমোদন লাগবে।
তবে বিশেষ কমিটিকে যাচাই বাছাইয়ের কাজটি দ্রুত সম্পন্ন করা জন্য কক্সবাজার, খাগড়াছড়ি, বান্দরবান, চট্টগ্রাম ও রাঙামাটির জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারদের নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি প্রবাস থেকে ভোটার নিবন্ধন কার্যক্রম চালু করেছে বাংলাদেশ সরকার। আবুধাবি দূতাবাস ও দুবাই কনস্যুলেটে এখন পর্যন্ত ১৫২৪ জনের বায়োমেট্রিক গ্রহণ করা হয়েছে।
এমতাবস্থায়, সংযুক্ত আরব আমিরাতে বসবাসরত চট্টগ্রাম অঞ্চলের বিশেষ এলাকাভুক্ত ৩২টি উপজেলা/থানার বাংলাদেশি নাগরিকদের জাতীয় পরিচয়পত্র দেওয়ার জন্য ভোটার নিবন্ধনের আবেদনগুলোর তদন্ত এবং বিশেষ কমিটির যাচাই-বাছাই কার্যক্রম দ্রুততম সময়ে সম্পাদন করা জরুরী।
বিশেষ কমিটি যা যাচাই করবে
ভোটার নিবন্ধন প্রক্রিয়ায় বিশেষ কমিটি যেসব তথ্য যাচাই করবে তা হলো:
- ভাই/বোনের ডাটাবেইজে বাবা/মায়ের নামের সঙ্গে আবেদনকারীর ফরম-১ এ উল্লেখিত বাবা/মাতার নামের মিল আছে কিনা।
- চাচা/ফুফুর ডাটাবেজে তাদের বাবার নাম ও ঠিকানার সঙ্গে আবেদনকারীর বিশেষ তথ্য ফরমে প্রদত্ত পিতামহের নাম ও ঠিকানার মিল আছে কিনা। প্রয়োজনে নিকট আত্মীয়ের মোবাইল নম্বরে কথা বলে তাদের পরিচিতি নিশ্চিত করা হবে।
- এছাড়াও ভোটার তালিকা আইন, ২০০৯ অনুযায়ী ভোটার হতে ইচ্ছুক উপযুক্ত ব্যক্তিকে বাংলাদেশের কোথাও ‘সচরাচর নিবাসী’ হতে হবে। নির্বাচন কমিশন কর্তৃক জারিকৃত পরিপত্রে ওই জেলাসমূহে যদি কেউ সচরাচর নিবাসের দাবি করে তবে সেই দাবির যথার্থতা পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে অনুসন্ধান করতে হবে।
- সংশ্লিষ্ট জেলাগুলোতে কোনো ব্যক্তি নিজস্ব সম্পত্তির সূত্রে তালিকাভুক্তির দাবি করে তবে তাদের সম্পত্তির মালিকানা ও এ সংক্রান্ত অন্যান্য তথ্য সংশ্লিষ্ট দলিলাদির তথ্য দিতে হবে।
- যারা বাংলাদেশি কোনো নাগরিকের সঙ্গে বৈবাহিক সূত্রে ভোটার তালিকাভুক্তির দাবি করবেন তাদের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কর্তৃক জারিকৃত নাগরিক সনদপত্রসহ দলিলাদির তথ্য সংগ্রহকারীকে দিতে হবে।
- অন্য কোনো সূত্রে কেউ ভোটার হওয়ার উপযুক্ত দাবি করলে তাদের এ সম্পর্কিত প্রমাণাদি তথ্য সংগ্রহকারীকে দিতে হবে।
যেসব দেশে প্রবাসী বাংলাদেশীরা বেশি রয়েছে এমন ৪০টি দেশে Bangladesh Embassy বা Consulate এর মাধ্যমে NID Registration (ভোটার নিবন্ধন) কার্যক্রম হাতে নিতে চায়। কিন্তু চট্টগ্রামে রোহিঙ্গা ইস্যুতে এ অঞ্চলেরর অনেক প্রবাসীর জাতীয় পরিচয়পত্র পেতে কিছুটা দেরি ও বিড়ম্বনা পোহাতে হবে।
তথ্যসূত্র: banglanews24.com