দেখুন ঘরে বসেই NID সংশোধন করার নিয়ম | NID Card Correction Online

আপনার জাতীয় পরিচয় পত্রে ভুল? দেখুন অনলাইনে NID সংশোধন করার নিয়ম। যেকেউ নিজেই অনলাইনে আবেদন করে ৭ থেকে ১৫ দিনের মধ্যে এনআইডি সংশোধন করতে পারেন।

NID সংশোধন করার নিয়ম
Advertisement

নতুন ভোটার হয়েছেন, অনলাইনে এনআইডি কার্ড ডাউনলোড করে দেখতে পেলেন নামে ভুল, অথবা পিতা-মাতার নামে ভুল। চিন্তার কোন কারণ নেই, ঘরে বসেই অনলাইনে আবেদন করে NID সংশোধন করতে পারবেন এবং সংশোধন হলে অনলাইন থেকেই এনআইডি কার্ড ডাউনলোড করতে পারবেন।

জাতীয় পরিচয় পত্র বা NID সংশোধন করতে কি কি লাগে, কিভাবে আবেদন করবেন তা নিচে আলোচনা করলাম। আপনি ২ উপায়ে জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধনের আবেদন করতে পারেন,

  1. অনলাইনে;
  2. উপজেলা নির্বাচন অফিসে সরাসরি উপস্থিত হয়ে

উভয় পদ্ধতিতেই আপনাকে প্রয়োজনীয় প্রমাণাদি ও কাগজপত্র সাবমিট করেই সংশোধনের আবেদন করতে হবে। আসুন প্রথমেই জেনে নিই জাতীয় পরিচয় পত্র বা ভোটার আইডি সংশোধন করতে কি কি লাগবে।

NID সংশোধন করতে কি কি লাগে

NID বা জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধন করতে সাধারনত প্রয়োজন হয়, শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ, অনলাইন জন্ম নিবন্ধন কপি। এছাড়া তথ্য প্রমাণের জন্য নাগরিকের পাসপোর্ট, ড্রাইভিং লাইসেন্স, চাকরিজীবিদের এমপিও শীট বা সার্ভিস বইয়ের কপি, বিয়ের কাবিন নামা, পিতা-মাতার আইডি কার্ড, ভাই-বোন ও সন্তানদের আইডি কার্ড প্রয়োজন হয়।

মুলত তথ্য সংশোধনের ধরণ অনুযায়ী, প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট আলাদা হয়ে থাকে। নিচে সংশোধনের ধরণ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টগুলো ছকে দেয়া হলো:

নিজ নাম সংশোধন করতে যা লাগবে (যে কোন ২টি)

  • জেএসসি, এসএসসি বা এইচএসসি অথবা সমমানের সনদ;
  • অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদ;
  • পাসপোর্ট/ড্রাইভিং লাইসেন্স;
  • বিবাহের কাবিন নামা;
  • কমপক্ষে ২ সন্তানের এনআইডি কার্ডের কপি যেখানে পিতা/মাতার নাম শুদ্ধ আছে;
  • এমপিও সিট/সার্ভিস বহি (সরকারি চাকরিজীবিদের জন্য)

জন্ম তারিখ সংশোধন (যে কোন ২টি)

  • জেএসসি, এসএসসি বা এইচএসসি অথবা সমমানের সনদ;
  • অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদ;
  • পাসপোর্ট/ড্রাইভিং লাইসেন্স;
  • বিবাহের কাবিন নামা;
  • এমপিও সিট/সার্ভিস বহি (সরকারি চাকরিজীবিদের জন্য)
ADVERTISEMENT

পিতা-মাতার নাম সংশোধন (যে কোন ২টি)

  • শিক্ষা বোর্ডের শিক্ষা সনদ;
  • অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদ, অথবা পাসপোর্ট/ড্রাইভিং লাইসেন্স;
  • পিতা-মাতার জাতীয় পরিচয় পত্র;
  • পিতা-মাতার জন্ম নিবন্ধন;
  • সরকারি চাকরীজীবিদের ক্ষেত্রে অফিস প্রধানের প্রত্যয়ন এবং এমপিও সিট/সার্ভিস বহি;
  • ওয়ারিশন সনদ/প্রত্যয়নপত্র (পিতার সকল সন্তানদের জন্মের ক্রম অনুযায়ী নাম ও জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর উল্লেখিত);
  • ভাই-বোনের জাতীয় পরিচয়পত্র যেখানে পিতা/মাতার নাম শুদ্ধ আছে।

বিস্তারিত দেখুন- ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে কি কি লাগে

আসুন এবার জানি, কিভাবে অনলাইনে এনআইডি বা জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধনের আবেদন করবেন।

Advertisement

অনলাইনে এনআইডি কার্ড সংশোধন করার নিয়ম

জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধন করার জন্য নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করতে হবে;

  1. বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের জাতীয় পরিচয় পত্রের ওয়েবসাইট services.nidw.gov.bd ভিজিট করুন;
  2. NID নম্বর, জন্মতারিখ ও ঠিকানা দিয়ে জাতীয় পরিচয় পত্র একাউন্ট রেজিস্ট্রেশন করুন;
  3. প্রোফাইলে লগইন করার পর এডিট বাটনে ক্লিক করে ভুল তথ্য গুলো সঠিকভাবে লিখুন;
  4. পরবর্তী ধাপে সংশোধন ফি জমা দিন;
  5. প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টের Scanned Copy আপলোড করে আবেদন সাবমিট করুন।

জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধনের প্রক্রিয়াটি নিচে বিস্তারিত দেখানো হলো। প্রক্রিয়াটি ধাপে ধাপে অনুসরণ করে আপনার ভোটার আইডি কার্ড সংশোধনের আবেদন করতে পারবেন।

ধাপ ১ – প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টগুলো স্ক্যান করুন/ ছবি তুলে নিন

জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধন আবেদন করার আগে আপনার ‍উচিত প্রয়োজনীয় প্রমাণগুলো স্ক্যান করে নির্দিষ্ট সাইজের মধ্যে Crop করে নেয়া। স্ক্যান করতে না পারলে, কোন টেবিলের উপর রেখে উপর থেকে ছবি তুলে নিন।

ধাপ ২ – এনআইডি একাউন্ট রেজিষ্ট্রেশন করুন

যদি জাতীয় পরিচয়পত্রের সাইটে রেজিস্ট্রেশন করা থাকে সরাসরি NID নম্বর ও পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করুন। রেজিস্ট্রেশন করা না থাকলে আগে রেজিস্টার অপশন থেকে রেজিস্ট্রেশন করুন। দেখুন NID Account Registration

Advertisement

ধাপ ৩ – তথ্য সংশোধন করুন

জাতীয় পরিচয় পত্রের একাউন্টে লগইন করার পর প্রোফাইল অপশনে যান। এখানে ৩ ধরণের তথ্য রয়েছে, ব্যক্তিগত তথ্য, অন্যান্য তথ্য ও ঠিকানা।

জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধন

ব্যক্তিগত তথ্য সংশোধন করার জন্য, উপরের ডান পাশ থেকে এডিট বাটনে ক্লিক করবেন। নিচের মত তথ্যগুলো সংশোধন করার অপশন পাবেন।

ADVERTISEMENT
NID সংশোধন করার নিয়ম

আপনি যে তথ্যটি সংশোধন করতে চান, তার বাম পাশের টিক অপশনে ক্লিক করুন। এভাবে আপনার ভুল তথ্যগুলো প্রমাণপত্রের সাথে মিল রেখে সঠিকভাবে টাইপ করুন। তারপর, পরবর্তী বাটনে ক্লিক করুন।

আপনার সংশোধন করা তথ্যের পূর্বরুপ ও সংশোধিত রুপ দেখতে পাবেন। সব ঠিক থাকলে আবারও পরবর্তী বাটনে ক্লিক করুন।

ধাপ ৪ – জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন ফি জমা করুন

এখন, আপনাকে আপনার ভুল তথ্যের ধরণ অনুযায়ী ফি প্রদান করতে হবে। মনে রাখবেন, আপনার কম্পিউটার বা মোবাইলের এতক্ষণ যা করেছেন তা ক্লোজ করবেন না। ফি প্রদান করেই আপনাকে আবার আবেদনের বাকি কাজ শেষ করতে হবে।

বিকাশের মাধ্যমে জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন ফি জমা দেওয়ার নিয়ম

বিকাশের মাধ্যমে ফি দিতে বিকাশ এ্যাপ থেকে আপনার বিকাশ একাউন্টে লগইন করুন। এবং নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করুন।

  1. পে বিল অপশনে যান
  2. সরকারি ফি অপশনে ক্লিক করুন এবং NID Service অপশনটি বাছাই করুন।
  3. আপনার NID নম্বরটি ইংরেজিতে লিখুন
  4. আপনার আবেদনের ধরণ বাছাই করুন।
  5. আপনার বিকাশ একাউন্টের পিন নম্বর দিয়ে ফি পরিশোধ করুন।

ফি পরিশোধ করা হলে আপনি জাতীয় পরিচয়পত্রের ওয়েবসাইটে আবার ফিরে জান এবং প্রমাণপত্রসমূহ আপলোড করে আবেদনটি সাবমিট করুন।

জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন ফি জমা দেওয়ার নিয়ম
জাতীয় পরিচয় পত্র ফি পরিশোধ

আরও দেখুন- ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে কত টাকা লাগে

ধাপ ৫ – ডকুমেন্ট আপলোড ও আবেদন সাবমিট করুন

আপনি ১ম ধাপে যে ডকুমেন্ট গুলো স্ক্যান বা ছবি তুলে রেখেছেন, এখন এগুলো আপলোড করুন। প্রথমে ডকুমেন্টের ধরণ সিলেক্ট করুন এরপর ডকুমেন্টটি আপলোড করুন।

এরপর আবেদনটি সাবমিট করুন এবং জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধন আবেদন ফরমটি ডাউনলোড করুন। আবেদনটি আপনাকে কোথা জমা দিতে হবে না, তাই টেনশন মুক্ত থাকুন।

যা অবশ্যই জানতে হবে

যদি ৭ থেকে ১০ দিনের মধ্যে সংশোধন অনুমোদনের কোন মেসেজ না আসে, আপনি উপজেলা নির্বাচন অফিসে আবেদনের কপিটি নিযে যোগাযোগ করতে পারেন।

তবে কিছু কিছু সংশোধনের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ৪৫ দিন পর্যন্ত সময় লাগতে পারে, যেটি নির্ভর করে সংশোধনের ক্যাটাগরির উপর। জেনে নিন ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে কত দিন লাগে

FAQs

ভোটার আইডি কার্ড নাম সংশোধন করতে কি কি লাগে?

ভোটার আইডি কার্ডের নাম সংশোধনের জন্য শিক্ষা সনদ ও ডিজিটাল জন্ম নিবন্ধন লাগে। শিক্ষা সনদ না থাকলে ড্রাইভিং লাইসেন্স বা পাসপোর্ট, সরকারী চাকুরির সার্ভিস বইয়ের কপি, বিয়ের কাবিন ইত্যাদিও দেয়া যায়।

ভুলক্রমে পিতা-মাতা অথবা স্বামীকে মৃত উল্লেখ করা হলে সংশোধনের জন্য কি কি ডকুমেন্ট দাখিল করতে হবে?

জীবিত পিতা-মাতা অথবা স্বামীকে ভুলক্রমে মৃত উল্লেখ করা হলে তা সংশোধনের জন্য সেই ব্যক্তির জাতীয় পরিচয় পত্র জমা দিতে হবে।

অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে কত দিন লাগে?

ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন ক্যাটাগরির উপর নির্ভর করে সংশোধন প্রক্রিয়ায় ৭ থেকে সর্বোচ্চ ৪৫ দিন লাগে। তবে উপযুক্ত প্রমাণপত্র দাখিল করে আবেদন করলে তা ২০ থেকে ২৫ দিনের মধ্যে আবেদন অনুমোদন হয়ে যায়।

Advertisement

Similar Posts

26 Comments

  1. আমি NID সংশোধনের জন্য আবেদন করেছিলাম।কিছু ডকুমেন্ট দিছি আর কিছু বাকি আছে।এখন বাকি ডকুমেন্ট দেয়ার জন্য কোন অপশন পাচ্ছিনা।আগে এডিট বাটন ছিল এখন তা দেখাচ্ছে না।এদিকে আমার NID সংশোধন করাটা খুব জরুরী। আমি এখন কি করতে পারি?? সরাসরি যগাযোগের কোন কন্টাক্ট নাম্বার আছে কি??

        1. উপরে দেখানো পদ্ধতিতে সংশোধন করতে পারবেন। তবে আপাতত স্মার্ট কার্ড পাবেন না। অনলাইন কপি ব্যবহার করতে হবে।

  2. আমি একটা আবেদন করছি প্রায় ১ বছর +।
    আবেদনটি চেক করে দেখলাম যেখানে লিখা আছে।”আপনার আবেদনটি পেন্ডিং অবস্থায় আছে”
    জেলা নির্বাচন অফিসে বেশ কয়েকবার গিয়ে দেখা করছি। ওনারা আমাকে আবেদন ফরমের কপি জমা দিতে বলে বলে এবং পরে মেসেজ আসবে এই কথা বলে কিন্তু আজ পর্যন্ত কোনো মেসেজ আসেনাই।
    এখন আমার করনীয় কী?
    একটা NID ঠিক করার জন্য যা যা ডকুমেন্টস দরকার তার সবকিছুই আমার কাছে আছে।

    1. হেল্পলাইনে ফোন দিয়ে জেনে নিতে পারেন কোন সমস্যা। আবেদনটির কি অবস্থা কেন পেন্ডিংয়ে আছে। হেল্পলাইনঃ ১০৫, অফিস টাইমের মধ্যে ফোন করতে হবে।

  3. আমার ভোটার আইডি কাট কাড সংশোধন করবো নাম ভোল কারছে নাম হবে রোকসানা আক্তার লিখছে রোকসানা আক্তার

  4. আমার নাম ও জন্ম তারিখ চেঞ্জ করবো।
    জন্ম নিবন্ধন আর পাসপোর্ট দিয়ে করা যাবে কি?
    শিক্ষাগত সনদে জন্ম তারিখ ভুল।
    আবার শিক্ষাগত সনদের জন্ম তারিখ আর আইডির জন্ম তারিখ সেম।
    আমি পাসপোর্ট মোতাবেক আইডি বানাতে চাচ্ছি এখন।

  5. আমি আমার এক বড় ভাই এর আইডি কার্ড অনলাইনে আবেদন কি,নাম পিতার নাম এবং জন্ম তারিখ সংশোধন এর জন্য।
    কিন্তুু তখনই -ত খারাপ লাগে যখন দিনের পর দিন উপ-জেলা অফিসে গিয়ে হস্তানতর হই।
    তার পরেও সব কিছু ঠিক থাকা সত্ত্বেও তাদের কোন রিসপনস নেই। অথচ তারা ১০০.০০০ (এক লক্ষ) টাকার বিনিময়ে সেই কাজ করতে ইচ্ছুক হয়☹️।।

  6. আমারNIDতে নাম ও বয়সের ভুল আছে।
    আমার মাদ্রাসার শিক্ষা সনদে সঠিকটা আছে কিন্তু জন্ম সনদের ভুলটাই NIDতে হয়েছে।
    আমার জন্য কি করতা উচিত
    সংশোধন করার জন্য??

    1. তাহলে ভুলটাই আপনার জন্য এখন সঠিক। জন্ম নিবন্ধনে বয়স সংশোধন করা যাবে না। আর জন্ম নিবন্ধন ছাড়া এনআইডি সংশোধন করা যাবে না। সে ক্ষেত্রে সার্টিফিকেট সংশোধন করতে পারেন।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।