ভোটার আইডি বা জাতীয় পরিচয়পত্র আমাদের জন্য অত্যাবশ্যকীয়। যে কোন সেবা পেতে যেমন, ব্যাংক একাউন্ট খোলা, চাকরীর আবেদন করা, পাসপোর্টের আবেদন করা বা সরকারি কোন সেবা পেতে অবশ্যই আমাদের এনআইডি প্রয়োজন হয়।

Advertisement

আপনার বয়স ১৬ হলেই আপনি নতুন ভোটার হওয়ার জন্য আবেদন করতে পারবেন। আপনার আবেদন অনুমোদন হলেই আপনি নতুন জাতীয় পরিচয় পত্র পাবেন। তবে ভোটার হওয়ার জন্য আপনার বয়স ১৮ পূর্ণ হতে হবে।

এখানে জানাবো নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার নিয়ম, কি কি কাগজপত্র লাগবে এবং কিভাবে অনলাইনে NID Application Form পূরণ করবেন বিস্তারিত।

সর্বশেষ আপডেট ও সহযোগিতার জন্য টেলিগ্রামে যোগ দিন

Advertisement
Telegram ChannelJoin Telegram
Facebook PageFollow on Facebook

নতুন ভোটারের জন্য আবেদন করার যোগ্যতা

  • এনআইডি কার্ড করার জন্য অবশ্যই বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে।
  • বয়স ১৬ বছরের বেশি হতে হবে।
  • পূর্বে জাতীয় পরিচয়পত্রের জন্য নিবন্ধন করা হয়নি।

নতুন ভোটার হতে কি কি লাগে

নতুন ভোটার আইডি কার্ড তৈরি করতে প্রয়োজন হবে,

  • PECE, JSC অথবা S.S.C. অথবা সমমানের সার্টিফিকেট
  • ডিজিটাল জন্ম নিবন্ধন সনদ
  • পাসপোর্ট / ড্রাইভিং লাইসেন্স (শিক্ষাগত সনদ না থাকলে)
  • বাবা, মা, স্বামী/স্ত্রীর আইডি কার্ডের ফটোকপি (অবশ্যই)
  • ইউটিলিটি বিলের কপি/বাড়ি ভাড়ার রসিদ/হোল্ডিং ট্যাক্স রসিদ (ঠিকানার প্রমাণ হিসেবে)
  • নাগরিকত্ব সনদ
  • নতুন ভোটার অঙ্গীকার নামা (প্রযোজ্য হলে)

নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার নিয়ম

২ উপায়ে ভোটার নিবন্ধন করার আবেদন করা যায়;

  1. অনলাইনে ভোটার নিবন্ধন করে।
  2. উপজেলা নির্বাচন অফিস থেকে ভোটার নিবন্ধন ফরম সংগ্রহ করে

নতুন ভোটারের জন্য আবেদন করার নিয়ম

অনলাইনে নতুন ভোটারের জন্য আবেদন করতে প্রথমে ভিজিট করুন services.nidw.gov.bd ওয়েবসাইটে। এখানে আপনার নাম, জন্ম তারিখ ও মোবাইল নম্বর দিয়ে একাউন্ট তৈরি করুন। এরপর ব্যক্তিগত তথ্য, ঠিকানা ও অন্যান্য তথ্য দিয়ে ফরম পূরণ করার পর কাগজপত্র আপলোড করে আবেদন জমা দিন। সবশেষে আবেদনের কপি কাগজপত্র সহ নির্বাচন অফিসে জমা দিন।

Advertisement

আপনার আবেদনটি যাচাই শেষে আপনাকে ছবি ও আঙ্গুলের ছাপ দেয়ার জন্য ডাকা হবে এবং একটি ভোটার নিবন্ধন ফরমের স্লিপ দেয়া হবে। বায়োমেট্রিক প্রদানের ১০-১৫ দিনের মধ্যেই আপনার আবেদন অনুমোদিত হলে অনলাইন থেকেই আপনার নতুন ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করতে পারবেন।

আসুন ভোটার আবেদনের বিস্তারিত প্রক্রিয়া জেনে নিই। প্রয়োজনীয় সকল তথ্যের সকল লিংক দেয়া থাকবে।

১. নতুন ভোটার নিবন্ধন ফরম পূরণ

অনলাইনে নতুন ভোটার নিবন্ধন করার জন্য services.nidw.gov.bd সাইটে ভিজিট করুন এবং নতুন ভোটার হওয়ার জন্য আবেদন করতে হবে।

আপনি নিজে NID Application Form পূরণ করার আগে বিস্তারিত প্রক্রিয়াটি ১ বার ভালভাবে পড়ে নিন। এরপর ধাপগুলো অনুসরণ করে আবেদন করুন। তাহলে আপনি নির্ভুলভাবে আবেদনটি করতে পারবেন।

Advertisement

ধাপ ১- একাউন্ট রেজিস্ট্রেশন

প্রথেমেই এই লিংকে যান NID Application Form এবং এখানে আপনার নাম, জন্মতারিখ ও ক্যাপচা কোডটি লিখে বহাল বা সাবমিট বাটনে ক্লিক করুন।

নতুন ভোটারের জন্য আবেদন

তারপর মোবাইল ভেরিফিকেশনের জন্য একটি মোবাইল নম্বর দিতে হবে। অবশ্যই আপনার সচল এবং এই মহুর্তে আপনার কাছে আছে এমন মোবাইল নম্বরটি দিবেন।

অবশ্যই আপনার বা যার আবেদন করছেন তার নিজের মোবাইল নম্বর দিতে হবে। কারণ ভবিষ্যতে লগইন করার জন্য বা পাসওয়ার্ড পরিবর্তনের জন্য নম্বরটি প্রয়োজন হবে।

নতুন ভোটারের জন্য আবেদন

আপনার মোবাইলে আসা ৬ ডিজিটের ভেরিফিকেশন পিন কোডটি লিখুন এবং বহাল বাটনে ক্লিক করে পরবর্তী ধাপে যান।

নতুন ভোটারের জন্য আবেদন

এখানে আপনাকে একটি ইউনিক ইউজারনেম (Username) ও পাসওয়ার্ড (Password) সেট করতে হবে। যাতে ভবিষ্যতে এই ইউজার ও পাসওয়ার্ড দিয়ে লগ ইন করে, জাতীয় পরিচয়পত্র ডাউনলোড, সংশোধনের আবেদন ও অন্যান্য সেবা নিতে পারবেন।

ইউজারনেম ইংরেজি নাম ও সংখ্যার মিশ্রনে দিবেন এবং পাসওয়ার্ড কমপক্ষে ৮ ডিজিটের হতে হবে।

যদি Username Already Exists ইউজারনেম ইতোমধ্যে ব্যবহৃত হয়েছে এমন সমস্যা দেখায়, ইউজারনেম পরিবর্তন করে পুনরায় চেষ্টা করুন।

মনে রাখবেন, আপনার ইউজারনেম অন্য কারে সাথে যেন না মিলে। তাই মাথা খাটিয়ে এটা লিখুন যেন ইউনিক হয়।

নতুন ভোটার আবেদন

ধাপ ২: NID Application Form পূরন করুন

জাতীয় পরিচয়পত্র সিস্টেমে রেজিস্ট্রেশন ও লগইন করার পর আপনি নিচের মত একটি ড্যাশবোর্ড পাবেন। যদি অটোমেটিক লগ ইন না হতে পারেন, আপনার ইউজারনেম এবং পাসওয়ার্ড দিয়ে লগ ইন করতে পারবেন।

নতুন ভোটার আবেদন

এখান থেকেই, আপনাকে নতুন ভোটার আবেদন করতে হবে। প্রোফাইল অপশনে ক্লিক করুন এবং উপরের ডান পাশ থেকে এডিট বাটনে ক্লিক করুন।

তারপর নিচের মত একটি পেইজ পাবেন, যেখানে আপনার ব্যক্তিগত তথ্য, অন্যান্য তথ্য ও ঠিকানা লিখতে হবে।

নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার নিয়ম

প্রথম ১ম অংশে আপনার সকল তথ্য এবং অবশ্যই আপনার পিতা ও মাতার নাম ও জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর লিখতে হবে।

বড় ভাই/ বোনের তথ্য প্রদান না করলেও চলবে। এর পর স্বামী/স্ত্রীর তথ্য বৈবাহিক অবস্থা অবশ্যই দিবেন, এবং স্বামী বা স্ত্রীর নাম জাতীয় পরিচয়পত্র অনুসারে দিবেন।

নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার নিয়ম

এর পর ২য় অংশ অন্যান্য তথ্যে ক্লিক করুন।

নতুন ভোটার আবেদন

এখানে আপনার শিক্ষাগত যোগ্যতা, পেশা ও ধর্ম বাছাই করুন। অন্য তথ্যগুলো সম্ভব হলে দিতে পারেন, না দিলেও কোন সমস্যা হবেনা।

এরপর ৩য় অংশ ঠিকানা অপশনে যান এবং আপনার বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানা বাছাই করুন।

নতুন ভোটার নিবন্ধন

আপনি বর্তমানে বাংলাদেশ থাকলে এখানে বাংলাদেশ সিলেক্ট করুন। তারপর আপনি বর্তমান নাকি স্থায়ী ঠিকানায় ভোটার হতে চান সেই ঠিকানার পাশে (এই ঠিকানায় ভোটার) এর পাশে টিক দিন।

আপনি বিদেশ থেকেও নতুন ভোটারের জন্য আবেদন করতে পারবেন। তবে সব দেশে এখনো নির্বাচন কমিশন এই কার্যক্রম চালু করেনি।

বর্তমান ঠিকানা ও স্থায়ী ঠিকানা নির্বাচন করুন এবং ভোটার এরিয়া নির্বাচন করুন। পরবর্তী ধাপে আপনাকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আপলোড করতে হবে।

ধাপ ৩- আবেদন সাবমিট ও নতুন ভোটার আবেদন ফরম ডাউনলোড করুন

এ ধাপে আপনার অবশ্যই প্রয়োজনীয় কাগজগুলোর স্ক্যানড কপি বা ছবি আপলোড করতে হবে না।

নতুন ভোটার আবেদন

আপনার আবেদনের বিস্তারিত তথ্যসমূহ পুনরায় যাচাই করে নিন যাতে কোন ভুল না থাকে। তথ্যসমূহ সঠিক থাকলে আপনার আবেদনটি নিশ্চিত করুন ও জমা দিন।

অনলাইনে আবেদন জমা হলে, ড্যাশবোর্ড থেকে আপনার আবেদন ফরমটি ডাউনলোড ও প্রিন্ট করে নিন।

এরপর আপনি যে এলাকায় ভোটার হওয়ার আবেদন করেছেন সেখানকার উপজেলা নির্বাচন অফিস অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সহ জমা দিন। অনলাইন আবেদনের পাশাপাশি আপনাকে আরও একটি ভোটার নিবন্ধন ফরম হাতে পুরণ করতে হবে।

২. তথ্য যাচাই ও বায়োমেট্রিক তথ্য প্রদান

এ ধাপে আপনার আবেদনটি উপজেলা বা জেলা নির্বাচন অফিস যাচাই বাছাই করবে। যাচাই করার জন্য আপনার সাথে তারা যোগাযোগ করতে পারে। সব কিছু ঠিক থাকলে আপনাকে বায়োমেট্রিক প্রদানের জন্য ডাকা হবে।

আবেদনটি যাচাই-বাছাই শেষে আপনার Biometric Information নেয়ার জন্য ডাকা হবে। এর ১৫ থেকে ৩০ দিন পরে আপনার আবেদনটি অনুমোদিত হলেই আপনি অনলাইন হতে জাতীয় পরিচয়পত্র ডাউনলোড করতে পারবেন। আরও পড়তে পারেন- ছবি তোলার কতদিন পর এনআইডি কার্ড পাওয়া যায়

আপনি অনলাইনে জাতীয় পরিচয় পত্র চেক করতে পারবেন যে এটি অনুমোদন হয়েছে কিনা। অনুমোদন হওয়ার পর অনলাইন থেকে জাতীয় পরিচয় পত্র ডাউনলোড করতে পারবেন।

দ্রুত হেল্প ও সহযোগিতার জন্য টেলিগ্রামে যোগ দিন

Telegram ChannelJoin Telegram
Facebook PageFollow on Facebook

নতুন ভোটারের জন্য আবেদন করতে জরুরী বিষয়

অনলাইনে আবেদন করুন আর সরাসরি উপজেলা নির্বাচন অফিস থেকে করুন, ভোটার নিবন্ধন ফরমে আরও কিছু জরুরী বিষয় থাকে। তা হচ্ছে, শনাক্তকারী ও যাচাইকারীর তথ্য।

ফরমের ৩৪ নং ক্রমিকে শনাক্তকারী হিসেবে আপনার প্রতিবেশি কোন একজন ব্যক্তির নাম ও এনআইডি নম্বর লিখতে হবে। এছাড়া ফরমের ৪০ নং ক্রমিকে যাচাইকারী হিসেবে আপনার এলাকার জনপ্রতিনিধি, চেয়ারম্যান, মেম্বার, কাউন্সিলরের নাম, সাক্ষর ও এনআইডি নম্বর প্রয়োজন হবে।

নতুন ভোটার অঙ্গীকার নামা

যেসব নতুন ভোটারের বয়স বেশি তাদের ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশন একটি অঙ্গীকার নামা চাইতে পারে। এই অঙ্গীকার নামা এজন্য যে, তিনি পূর্বে কখনো ভোটার নিবন্ধন করেননি এবং প্রথমবারই ভোটার হওয়ার জন্য আবেদন করছেন। একাধিকবার ভোটার হওয়ার প্রমাণ পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হলে তিনি তা মেনে নিতে বাধ্য থাকবেন।

নতুন ভোটার আবেদন সম্পর্কে সাধারণ প্রশ্ন ও উত্তর

নতুন ভোটার হতে কি কি লাগে?

নতুন ভোটার হতে শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ, জন্ম নিবন্ধন, বাবা, মা, স্বামী/স্ত্রীর আইডি কার্ডের ফটোকপি (অবশ্যই) লাগে। এছাড়া নাগরিকত্ব সনদ, বাবা ব্যতীত রক্তের সম্পর্ক আছে এমন ৩ জনের জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি এবং ইউটিলিটি বিল/ বাড়ি ভাড়ার রসিদ/হোল্ডিং ট্যাক্স রসিদ লাগতে পারে।

নতুন ভোটার আইডি কার্ড অনলাইনে কিভাবে পাব

ভোটার নিবন্ধন আবেদন অনুমোদন হলে, অনলাইনে NID Account Registration করে ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করতে পারবেন।

নতুন ভোটার আবেদন করলে কতদিন পর অনলাইন কপি পাওয়া যায়?

নতুন ভোটার আবেদন করার ৩০ থেকে ৪৫ দিন পর অনলাইন কপি পাওয়া যায়।

ক্যাটাগরিজাতীয় পরিচয় পত্র
নতুন ভোটার হতে চানNID Application
হোমপেইজNID BD
Advertisement