NID সংশোধন পুনর্বিবেচনার ক্ষমতা পাচ্ছেন নির্বাচন কমিশন সচিব

বাংলাদেশের নাগরিকদের জাতীয় পরিচয় পত্র বা ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন আবেদন বাতিল হওয়ার পরও তা পুনরায় বিবেচনার ক্ষমতা পাচ্ছেন নির্বাচন কমিশন সচিব।

জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধন পুনর্বিবেচনা
Advertisement

সম্প্রতি নির্বাচন কমিশন Standard Operation Procedure সংক্ষেপে SOP সংশোধনের জন্য উদ্যোগ নিয়েছে। এখন থেকে জাতীয় পরিচয় পত্র বা NID সংশোধনের আবেদন বাতিল হওয়ার পরও তা পুনরায় বিবেচনা করে অনুমোদন দিতে পারবেন ইসি সচিব।

আসুন এ সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানি।

বর্তমানে জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধন প্রক্রিয়া

বর্তমানে জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধনের আবেদনগলো ক্যাটাগরি অনুযায়ী ৪ স্তরে যাচাই বাছাই করে অনুমোদন বা নিষ্পত্তি করা হয়। এই চার স্তরের সবচেয়ে প্রথমে রয়েছেন উপজেলা নির্বাচন অফিসার, জেলা নির্বাচন অফিসার, আঞ্চলিক নির্বাচন অফিসার এবং সবার উপরে NID অনুবিভাগের মহা পরিচালক।

Advertisement

যখন কেউ ভোটার আইডি কার্ড সংশোধনের আবেদন করেন, আবেদনটি উপজেলা নির্বাচন অফিসারের কাছে যায়। আবেদনটি তার এখতিয়ারে না থাকলে চলে যায় জেলা নির্বাচন অফিসারের কাছে। এভাবে জেলা নির্বাচন অফিসারের কাছে যাওয়া আবেদন যায় আঞ্চলিক কর্মকর্তার কাছে।

একইভাবে আঞ্চলিক কর্মকর্তার আবেদন যায় জাতীয় পরিচয় পত্র অনুবিভাগের মহাপরিচালকের কাছে। মহাপরিচালক ছিলেন সর্বশেষ সিদ্ধান্তদাতা যিনি আবেদনটি অনুমোদন বা চুড়ান্তভাবে বাতিল করতে পারতেন।

আরও পড়ুন: জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধন করতে কি কি লাগে

সংশোধন প্রক্রিয়ায় যা পরিবর্তন আসছে

এতদিন NID অনুবিভাগের মহাপরিচালকই চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত দিতে পারতেন যে, কোন সংশোধন আবেদন অনুমোদন হবে কিনা বা বাতিল হবে কিনা। কিন্তু নতুন নিয়মে, কোন আবেদন মহাপরিচালকের এখতিয়ারে না থাকলে বা বাতিল করলে চুড়ান্ত বিবেচনার জন্য নির্বাচন কমিশন সচিবের কাছে যাবে। এখন থেকে জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধনের চুড়ান্ত ধাপ হচ্ছে ইসি সচিব।

Advertisement

আরও পড়ুন: জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধনে ইসির নির্দেশনা

এক্ষেত্রে ইসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সম্প্রতি অনুষ্ঠিত তথ্যপ্রযুক্তির প্রয়োগ কমিটির সভায় কমিটির প্রধান নির্বাচন কমিশনার মো: আহসান হাবিব খান এমন সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন এবং এ বিষয়ে মহাপরিচালককে তা বাস্তবায়নের নির্দেশনা দিয়েছেন।

তারা আরো জানিয়েছেন, আবেদন ক্যাটাগরি উপর নির্ভর  করে আবেদনগুলো কোন কর্মকর্তা বাতিল করবেন তা নির্ধারিত না হওয়ার ফলে অনেকের আবেদন ঝুলে থাকে।

একারণে NID Correction আবেদনগুলোর গুরুত্ব বিবেচনা করে এবং আবেদনগুলোর কাজের গতি বৃদ্ধির জন্য  নির্বাচন ভবনের নির্দিষ্ট কর্মকর্তাদের পাশাপাশি অতিরিক্ত ২০ জন আঞ্চলিক কর্মকর্তাকে এর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

Advertisement

ইসির সার্ভারে বর্তমানে NID সংশোধন আবেদনের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১১ কোটি ৯১ লাখ ৫১ হাজার ৪৪০টি। তবে নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল মন্তব্য করেছেন যে, এই আবেদন গুলোর মধ্যে কোটি কোটি ভুল রয়েছে এবং এইসব ভুল ত্রুটির উপর ভিত্তি করেই এনআইডি আবেদন সরবরাহ করা হচ্ছে।

এনআইডি আবেদনের ক্ষেত্রে এ সকল ভুলের জন্যই প্রতিদিন শত শত আবেদন জমা পড়ে থাকে ইসি সার্ভারে এবং অনেক আবেদন বাতিলও হয়ে যায়।

মহাপরিচালকের দেয়া প্রস্তাবটি বাস্তবায়ন করা হলে সেবা গ্রহীতাদের সুযোগ যেমন বৃদ্ধি পাবেন, তেমনি সেবাও ত্বরান্বিত হবে বলে মনে করেন অনেকে।

এনআইডি সংশোধন আবেদন পুনর্বিবেচনার সুবিধা 

নির্বাচন কমিশন থেকে এনআইডি আবেদন পুনর্বিবেচনা করার একটি বাড়তি স্তর যোগ করার কারণে সংশোধন আবেদনকারীদের জন্য অনেকটাই সুবিধা হতে পারে।

ভোটার আইডি সংশোধনের আবেদন সময়ও অনেকেই ছোটখাটো ভুল করে থাকে। আবেদন করার সময় এ ধরনের ভুল থাকার কারণে নির্বাচন কমিশনের বিভিন্ন কর্মকর্তারা ছোটখাটো তথ্য সংশোধন আবেদন বাতিল করে দেয়। ফলে, সংশোধন আবেদন বাতিলের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং নাগরিকদের অনেক ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।

ইসি সচিব এই আবেদন গুলো পুনর্বিবেচনা করবে এবং ছোট খাটো ভুলের জন্য বাতিল হওয়া আবেদন বা কোন ভুল না থাকলেও বাতিল হওয়া আবেদন গুলো পুনর্বিবেচিত হবে। এর ফলে জাতীয় পরিচয়পত্রের আবেদন বাতিলের সংখ্যা আরও কমে আসবে বলে আশা করা যায় এবং সেবা গ্রহীতাদের জন্যও তা বেশ সুবিধাজনক হবে বলে আশা করা যায়।

তথ্যসূত্র: Banglanews24

জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধন সংক্রান্ত আরও তথ্য

Advertisement

Similar Posts

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।